তিনি গানে গানে কেবল যৌনতা উসকে দেন, মঞ্চেও নির্ভর করেন আবেদনময়ী পারফরম্যান্সের ওপর—এই সময়ের আলোচিত তরুণ গায়িকা সাবরিনা কার্পেন্টারের বিরুদ্ধে প্রায়ই এমন অভিযোগ শোনা যায়। কিছুদিন আগে এই অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছিলেন ২৬ বছর বয়সী মার্কিন গায়িকা। তবে এবার নিজেকে যেন একটু সংযত করলেন তিনি। গত শনিবার রাতে লন্ডনের হাইড পার্কে বিটিএস উৎসবে ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে সাবরিনা যখন মঞ্চে উঠলেন, তখন তাঁর চিরচেনা মিষ্টি সুর ঠিকই শোনা গেল—তবে এবার রং একটু কম ছিল। এদিন তিনি নিজেই খানিকটা সংযত ছিলেন। গোটা পরিবেশনা ছিল পরিবারবান্ধব।
‘জুনো’ গানে আগের মতো খোলামেলা পরিবেশনার বদলে, এবার তিনি মঞ্চে ছিলেন অনেকটাই শান্ত। তবু তাঁর পারফরম্যান্সে কোনো ঘাটতি ছিল না। ১৭টি গানের তালিকায় হিট সব ট্র্যাক, তার হাস্যোজ্জ্বল মুখ আর প্রাণবন্ত চুলে নেচে-গেয়ে মঞ্চ মাতিয়ে রাখলেন। সাবরিনার গান মূলত এই প্রজন্মের তরুণীদের জন্য। কখনো বিচ্ছেদের রাগ, কখনো প্রেমিককে নিয়ে অস্বস্তি উঠে আসে তাঁর গানে। ড্যান্স নাম্বার থেকে গিটারে ভর করে একক পরিবেশনায় সাবরিনা যেভাবে মঞ্চ মাতিয়ে রাখেন, তাঁর ভক্ত না হয়ে উপায় কী!
যদিও তাঁর গত বছরের তুমুল হিট গান ‘এক্সপ্রেসো’ দিয়ে সারা দুনিয়ায় জনপ্রিয়তা পেয়েছেন; তবে গানের দুনিয়ায় অনেক দিন ধরেই আছেন সাবরিনা। পেনসিলভানিয়ার এই শিল্পী ১০ বছর বয়সেই ইউটিউবে গান গাওয়া শুরু করেন। ১১-তে মাইলি সাইরাসের বিকল্প খোঁজার প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হন।
শনিবার রাতে হাইড পার্কের মঞ্চে তাঁকে দেখে মনে হলো এমন মুহূর্তের জন্যই হয়তো এত দিন অপেক্ষা করছিলেন। গানবাজনার ফাঁকে বারবার বললেন, ‘এই ভালোবাসা পাওয়ায় তিনি কৃতজ্ঞ।’ ‘লন্ডন এত মজার জায়গা’ বলতেও ভুললেন না।
চলতি বছরের মার্চে ব্রিট অ্যাওয়ার্ডসের পারফরম্যান্সে সাহসী পরিবেশনার পর নতুন করে সাবরিনাকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়। বিতর্ক চরম মাত্রায় পৌঁছায় গত মাসে মুক্তি পাওয়া তাঁর নতুন অ্যালবাম ‘ম্যানস বেস্ট ফ্রেন্ড’-এর প্রচ্ছদ প্রকাশের পর। সেখানে তাঁকে দেখা যায় হাঁটু গেড়ে বসা অবস্থায়, পেছন থেকে এক পুরুষ তাঁর চুল টানছে। গ্লাসগো উইমেনস এইডসহ অনেক সংগঠন বলেছে, এই চিত্র নারী নির্যাতনের ইঙ্গিত দেয়। তবে এদিনের পারফরম্যান্স দিয়ে যেন সব বিতর্ক মুছে দিলেন তিনি।
শোর শেষটা ছিল সিনেমার মতো—তিনি উঠলেন এক ক্রেনে, যেটা দর্শকদের ওপর দিয়ে ঘুরে গেল। সবাই কাছ থেকে সাবরিনাকে ক্যামেরাবন্দী করার সুযোগ পেলেন।
সূত্র: প্রথম আলো